শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় ভিক্ষায় চলে মা-বাবা হারানো এতিম দুই ভাই-বোনের সংসার। আর্থিক সাহায্য দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাঁঠালিয়া উপজেলার চেচঁরী রামপুর ইউনিয়নের দক্ষিন চেচঁরী গ্রামের জমাদ্দার হাট এলাকায় বসবাস করেন মৃত সেকান্দার আলীর দুই সন্তান। মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী সালমা আক্তার (২০) ও ছেলে মাইনুল ইসলাম (১৮)। তাদের পিতা ১৫ বছর আগে মারা যায়। পিতা মারা যাওয়ার ঠিক ৩ বছরের মধ্যে মা মারা যায়। পিতা-মাতাকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় দুই ভাই-বোন। অর্থের অভাবে শিক্ষার জন্য যাওয়া হয়নি প্রাথমিক স্কুলেও। জীবন যুদ্ধে দু’মুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে ছোট থেকেই করতে হয়েছে ভিক্ষা।
পিতা সেকান্দার আলীর জমিজমা না থাকায় নানা বাড়িতে ছোট্ট ভাঙ্গা খুপরি ঘরে বসবাস করে চলছে তাদের করুণ জীবন। মাইনুলের বোন সালমা মানসিক রুগী তাই তাকে বাড়িতে রেখে একাই বিভিন্ন রাস্তা ঘাট, হাট-বাজার, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষা করে টাকা জোগাড় করে সংসার চালায় মাইনুল। বোন মানসিক রুগী থাকায় ভিক্ষার টাকায় নিত্যপণ্যের বাজার ক্রয় করে বাড়িতে এসে তারই রান্না করে বোনকে নিয়ে খেতে হয়৷ এযেন করুণ জীবন কাহিনী। তাদের দেখার এবং পাশে দাড়াবার কেউ নেই।
তাদের কষ্টের কথা শুনে কাঁঠালিয়া উপজেলার স্থানীয় এক সংবাদকর্মী তার ফেসবুক একাউন্টে সমাজের বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই এতিম দুই ভাই বোনদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা জানান। ফেসবুকে পোষ্ট দেখে সাহায্যের হাত বারিয়ে দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন। তিনি তার কার্যালয়ে মাইনুল ইসলামের হাতে নগদ ৫ হাজার টাকা তুলে দেন। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ভিক্ষা না করে কর্মকরে টাকা আয় করে সংসার চালাতে পারে সেই পরিকল্পনায় এতিম দুই ভাই বোনের সরকারি অনুদানে একটি দোকান ঘর তৈরি করে দেওয়াসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেন।
ইউএনওর কাছ থেকে নগদ টাকা পেয়ে খুঁশিতে মাইনুল ইসলাম বলেন, আমাদের খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য ৫ হাজার টাকা দিয়েছে ইউএনও স্যার। এই টাকায় আমাদের অনেক দিন চলে যাবে। আর এইকয়দিনে কষ্ট করে মানুষের দাঁড়ে দাঁড়ে ভিক্ষা করতে হবে না।
কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দেখতে পেয়ে বিষয়টি খুব খারাপ লাগলো। পোস্ট দাতারা সাথে যোগাযোগ করে এতিম মাইনুলকে নিয়ে অফিসে আসার কথা জানাই৷ অফিসে আসলে তার হাতে নগদ অর্থ তুলে দেই এবং ভিক্ষা না করে নিজে যাতে কর্মকরে খেতে পারে সেই উদ্যোগে একটি দোকান ঘর তৈরি করে দেওয়া সহ সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।
Leave a Reply